Wednesday, April 18, 2012


শিশুমৃত্যুর হার আরো কমেছে
বাংলাদেশে পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার গত চার বছরে আরো কমে এসেছে। দেশের জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির নিয়ে ২০১১ সালের ষষ্ঠ জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষার (বিডিএইচএস) প্রাথমিক প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। 
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, বর্তমানে পাঁচ বছর বয়স শ্রেণীতে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫৩, যেখানে ২০০৭ সালে এই হার ছিল ৬৫। 

সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য-৪ অনুযায়ী, ২০১৫ সালের মধ্যে এই হার হাজারে ৪৮ এ নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। 

১৯৯৩ সালে প্রথম জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষায় পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, সে সময় পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার ছিল হাজারে ১৩৩। 

বর্তমানে এক বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫২ থেকে কমে ৪৩ হয়েছে। ২০০৭ সালে যেখানে জন্মের এক মাসের মধ্যে প্রতি হাজারে ৩৭টি শিশু মারা যেত, বর্তমানে এই হার কমে হয়েছে হাজারে ৩২। 

সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ বছরের নিচে মারা যাওয়া শিশুদের ৬০ শতাংশেরই মৃত্যু হয় জন্মের এক মাসের মধ্যে। 

প্রসূতিসেবার উন্নতি, পরিবারের আকার নিয়ন্ত্রণে থাকা এবং জন্মবিরতির বিভিন্ন পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং দুই সন্তান জন্মের মধ্যে ব্যবধান বাড়ায় শিশুমৃত্যুর হার কমে আসছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। 

বর্তমানে ৩২ শতাংশ প্রসূতি সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর সহায়তা পান। ২০০৭ সালে ২১ শতাংশ প্রসূতি এ সেবা পেতেন। 

জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত চার বছরে উর্বরতার হার কমেছে, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের হার বেড়েছে, প্রসূতিসেবার মানও বেড়েছে। 

তবে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার এখনও উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। গত চার বছরে এ ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে নামমাত্রই।

বাংলাদেশে ১৯৯৩-৯৪ সাল থেকে প্রতি তিন বা চার বছর পরপর এই সমীক্ষা চালানো হয়ে আসছে। স্বাস্থ্য, জনসংখ্য ও পুষ্টি খাত উন্নয়ন পরিকল্পনার (এইচপিএনএসডিপি) ১৮টি বিশেষ লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি আসছে কি না- তার মূল্যায়নে ২০১১ সালের সমীক্ষার ফল ব্যবহার করা হবে। 

আন্তর্জাতিক জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষা কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের আইসিএফ ইন্টারন্যাশনাল অফ ক্যালভারটনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় পরিচালিত এ সমীক্ষার তত্ত্বাবধান করে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এনআইপিওআরটি)। 

এবারের সমীক্ষার জন্য সারা দেশের ১৭ হাজার ১৪১টি পরিবারের ১২ থেকে ৪৯ বছর বয়সী বিবাহিতা নারী ও ১৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী পুরুষের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। গত বছর ৮ জুলাই থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং সেগুলো একত্রিত করা ও পর্যালোচনার জন্য ২৩ জুলাই থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাস সময় লাগে। 

No comments: