Sunday, November 6, 2011

All Rounder: All Rounder

All Rounder: All Rounderপরবর্তী সংবাদ »
আনন্দের মুহূর্তে রোনালদোর আক্ষেপ
গ্রহান্তরের ফুটবল খেলছেন দুজনই। বাকি সবাইকে ছাপিয়ে তাঁদের দ্বৈরথ এখন বিশ্বফুটবলের অন্যতম আকর্ষণ। সেখানে হাল আমলে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে গেছেন লিওনেল মেসি। সর্বশেষ দুবার বিশ্বসেরা ফুটবলারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিলেছে এ আর্জেন্টাইনের। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর তাতে থোড়াই কেয়ার। গত মৌসুমের 'ইউরোপিয়ান শু' পুরস্কারপ্রাপ্তির দিনে প্রতিদ্বন্দ্বীকে সুযোগ বুঝে খোঁচা মারতেও ছাড়েননি তিনি।
বিশ্বসেরা ফুটবলার নির্ধারিত হয় সারা বিশ্বের জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক এবং সাংবাদিক প্যানেলের ভোটের ভিত্তিতে। সেখানে পছন্দ-অপছন্দের একটা ব্যাপার এসেই যায়। 'ইউরোপিয়ান শু' পুরস্কারে ওসবের বালাই নেই। ইউরোপের লিগগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা পান এই সম্মানজনক পুরস্কার। গতবার হুগো সানচেজের রেকর্ড ভেঙেচুরে লা লিগায় ৪০ গোল করে সে পুরস্কার বগলদাবা করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের রোনালদো। তাঁর পয়েন্ট ৮০। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মেসি পিছিয়ে আছেন ১৮ পয়েন্টে। স্প্যানিশ লিগে গত মৌসুমে ৩১ গোল করেছিলেন তিনি। ওসব দিকে ইঙ্গিত করেই পুরস্কার নিয়ে রোনালদোর প্রতিক্রিয়া, 'ব্যালন ডি'অর নির্ধারিত হয় ভোটে, অর্থাৎ ব্যক্তিগত মতামতই সেখানে শেষ কথা। তথ্য-প্রমাণের গুরুত্ব সেখানে কম। আর এ গোল্ডেন বুট কে জিতবে, সেটি কারো মতামতের ওপর নির্ভর করে না। কে বেশি গোল দিল, সেটি সবাই দেখতে পায়।' মেসির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যে তাঁর আগ্রহ নেই, সেটিও স্পষ্ট করে বলেছেন তিনি, 'লিওর সঙ্গে দ্বৈরথ নিয়ে আমি মোটেই চিন্তিত নই। আমি খেলতে পছন্দ করি, লোকে আমার খেলা দেখতে পছন্দ করে, আমি তাই কিছুই বদলাব না। আমি সেরার লড়াইয়ে থাকতে চাই। সেটি শুধু লিওর সঙ্গে নয়, ইউরোপজুড়ে আরো যেসব দুর্দান্ত ফুটবলার আছে, সবার সঙ্গেই। আর সেটি শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, দলীয় পর্যায়েও।'
এই দলীয় ব্যাপারটাই মোদ্দা কথা। রোনালদো 'ইউরোপিয়ান শু' জিতলে কী হবে, লা লিগার শিরোপা এখনো জিততে পারেননি। সেটা মেসির বার্সেলোনার দখলে। চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাও তাই। রিয়ালের হয়ে সাফল্যের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকা রোনালদো তাই বলতে পারছেন, 'চ্যাম্পিয়নস লিগ বা লা লিগা শিরোপার সঙ্গে আমি এই ইউরোপিয়ান শু অদল-বদল করতে প্রস্তুত। আসলে ব্যক্তিগত স্বীকৃতির মূল্যটা তখনই থাকে, যখন দল হিসেবে কিছু জেতা যায়। আমি তাই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে শিরোপা জেতার জন্য উদগ্রীব।' নিজের স্কোরিং রেকর্ডের চেয়ে দলীয় সাফল্যেই যে তাঁর মনোযোগ বেশি, সেটিও বলেছেন রোনালদো, 'আমি রেকর্ড ভাঙা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। আমার ভাবনাজুড়ে কেবল রিয়াল মাদ্রিদ। আমাদের ক্লাব এখন গতবারের চেয়ে ভালো, আরো পরিণত এবং আমরা এখন জেতার অভ্যাস গড়ে তুলেছি। এ মৌসুমটি যে ভালো হবে, সে ব্যাপারে আমরা সবাই আত্মবিশ্বাসী। রিয়াল মাদ্রিদের যে ঐতিহ্য এবং যে মানের খেলোয়াড় আছে তাতে দীর্ঘ সময় গুরুত্বপূর্ণ ট্রফি না জিতে থাকাটা স্বাভাবিক নয়।'
ব্যক্তিগত স্বীকৃতির পাশাপাশি দলীয় সাফল্যও মিললে তবেই না দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য পূরণ হবে রোনালদোর। সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের তালিকায় ব্র্যাকেটবন্দি হওয়া! গতকাল ইউরোপিয়ান শু'র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ছিলেন তেমনই দুজন আলফ্রেদো দি স্তেফানো এবং ইউসেবিও। তাঁদের পাশে পেয়ে রোনালদোর ভেতরের আগুনটা যেন উসকে উঠেছে, 'এমন দুজন গ্রেট ফুটবলারের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারা দারুণ অনুভূতি। ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের পাতায় তাদের সঙ্গে আমিও ঠাঁই করে নিতে চাই। আমার বয়স এখন ২৬ বছর, এখনো অনেক কিছু প্রতিনিয়ত শিখছি আর এমন একটা ক্লাবে আছি, যেখানে ফুটবলার ও ব্যক্তি হিসেবে উন্নতির অফুরন্ত সুযোগ। আমার সামনে এখনো আরো অনেক বছর পড়ে আছে।'
মেসির সামনেও আছে অফুরন্ত সময়। রোনালদো চান বা না চান, এ দুই যুযুধনের দ্বৈরথের উত্তাপ তাই আরো অনেক দিনই উপভোগের সুযোগ থাকছে দর্শকদের

No comments: