Tuesday, June 19, 2012

একা থাকলে হূদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি!


হূদরোগ এমনিতেই খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এতে যখন-তখন রোগীর মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে যারা একা থাকে, অন্যদের চেয়ে তাদের আগে মারা যাওয়ার ঝুঁকি বেশি। ৪৪ হাজারের বেশি হূদরোগীর ওপর চালানো আন্তর্জাতিক এক সমীক্ষার ফলাফলে এ তথ্য পাওয়ার কথা দাবি করেছেন গবেষকেরা।
আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চিকিত্সা সাময়িকী দি আর্কাইভস অব ইন্টারনাল মেডিসিনে প্রকাশিত এই সমীক্ষা-বিষয়ক নিবন্ধে বিষয়টি তুলে ধরা হয়। আজ মঙ্গলবার রয়টার্সে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা জানা যায়। একদল মার্কিন গবেষক সমীক্ষাটি পরিচালনা করে।


গবেষকদের ভাষ্য, হূদরোগীদের মধ্যে যাঁরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকেন, মনের কথা অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারেন, তাঁদের চেয়ে একাকী জীবনযাপন করা ব্যক্তিদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।
গবেষকদের তথ্যমতে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪৪ হাজারের বেশি হূদরোগীর ওপর দীর্ঘ চার বছর ধরে এই সমীক্ষা চালানো হয়। যাঁরা এ রোগে উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে আছেন, তাঁদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হয়। অংশগ্রহণকারী সবার বয়স ৪৫ বছর বা এর বেশি।
প্রাপ্ত ফলাফল থেকে গবেষকেরা দাবি করেছেন, গত চার বছরে একা বসবাস করা ৬৫ বছরের চেয়ে কম বয়সী হূদরোগীর মধ্যে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সে তুলনায় স্বজনদের সঙ্গে বাস করা একই বয়সী হূদরোগীর মৃত্যুর হার ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
৬৬ থেকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত ব্যক্তিরা এমনিতেই আয়ুষ্কালের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যান। বয়স, লিঙ্গ, কর্মসংস্থান, জাতি, দেশ প্রভৃতি বিবেচনায় নেওয়ার পরও দেখা গেছে, সামাজিকভাবে একাকী বসবাসকারী হূদরোগীরা দ্রুত মারা যান। তবে ৮০ বছরের বেশি বয়সী হূদরোগীদের ওপর একাকী থাকা বা পরিবারসহ থাকার বিষয়টি তাঁদের মৃত্যুতে কোনো প্রভাব ফেলে না বলেও তাঁরা দাবি করেন।
সামাজিকভাবে একাকী বা অন্যদের সঙ্গে থাকার কারণে কেন হূদরোগীদের মৃত্যুঝুঁকি কমবেশি হয়—এর কারণ সমীক্ষায় পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এ ব্যাপারে প্রধান গবেষক বোস্টনের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের বিশেষজ্ঞ দীপক ভাট বলেন, এর সঙ্গে নিয়মিত চিকিত্সা সেবা নেওয়ার সঙ্গে বিষয়টি জড়িত থাকতে পারে। তিনি বলেন, যেসব হূদরোগী একা বসবাস করেন, তাঁদের নিয়মিত ওষুধ সেবন বা ওষুধ শেষ হয়ে গেলে তা নিয়ে আসার ক্ষেত্রে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমনকি হঠাত্ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের চিকিত্সকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো কেউ ঘরে থাকে না।
দীপক ভাট ও তাঁর সহযোগী গবেষকদের ধারণা, ৮০ বছরের কম বয়সী হূদরোগী যাঁরা একা বাস করেন, তাঁদের মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক কিছু সমস্যার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। যেমন কাজের চাপ বা একাকিত্ব। অধিক বয়স্ক যাঁরা একা থাকেন, তাঁদের মধ্যে এর বিপরীত চিত্রটিও দেখা যেতে পারে। তাঁরা সমবয়সী অন্য হূদরোগীদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে সুস্থ থাকতে পারেন এবং একাকী নিজের মতো করে স্বাবলম্বী জীবনযাপন করতে পারেন।

by
prothom-alo

No comments: