Friday, February 10, 2012

মাশরাফি বিন মুর্তজার সততায় মুগ্ধ বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর


মাশরাফি বিন মুর্তজার সততায় মুগ্ধ বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের মালিক শিহাব চৌধুরী, 'মাশরাফি যে প্রস্তাব পাওয়ার পরপরই বিষয়টা জানিয়েছে, সেটা খুবই ভালো উদাহরণ হয়ে থাকল। কারণ এ ধরনের বিষয় আটকানো যেখানে খুবই কঠিন, সেখানে এটা জানিয়ে দেওয়ায় এখন সবাই আরো সতর্ক হবে।' বাংলাদেশে ধুমধাড়াক্কা ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর শুরুর আগে মাশরাফির বক্তব্যে রীতিমতো সতর্কীকরণ এক বিজ্ঞপ্তিই যেন জারি হয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ দলের সাবেক এ অধিনায়ক এখন আবার আছেন অন্য বিপদে। কারণ তিনি প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তবে প্রস্তাবকের নাম বলেননি। বলতে চাচ্ছেনও না। কারণ প্রস্তাবক তাঁর পরিবারের দিব্যি দিয়ে নামটা প্রকাশ না করার সকাতর অনুরোধ করেছেন বলে মাশরাফির ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর। যে জন্য তিনি এখন দ্বিধায়। এদিকে আবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তরফ থেকে তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে নামটা বলার জন্য। রীতিমতো এক দ্বিমুখী সংকটে মাত্রই ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরা এ ফাস্ট বোলার।

তবে তিনি মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও বাতাসে ঠিকই কয়েকজন সম্ভাব্য প্রস্তাবকের নাম ভেসে বেড়াচ্ছে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে বসেই প্রস্তাবটা পেয়েছিলেন মাশরাফি। আর সেখানে বিমান দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাংলাদেশ দলের এক সাবেক ক্রিকেটারই তাঁর কাছে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান। সেই তিনি কে? সন্দেহভাজনদের তালিকার ওপরের দিকেই থাকছে জাতীয় দলের সাবেক অফস্পিনার শরীফুল হক প্লাবনের নাম। ১৯৯৪ সালের আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলা এ ক্রিকেটার অবশ্য কালের কণ্ঠের কাছে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, প্রমাণ করতে পারলে যেকোনো শাস্তি তিনি মাথা পেতে নেবেন (কালের কণ্ঠের প্রতিদিনের আয়োজন 'মুখোমুখি প্রতিদিন'-এ পড়ুন তাঁর বিস্তারিত বক্তব্য)। সেই সঙ্গে জাতীয় দলের সাবেক এক ওপেনার ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের সম্পৃক্ততার গুঞ্জনেও মিরপুরের 'হোম অব ক্রিকেট' বেশ সরগরম। তবে বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল এখনই কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে চান না, 'এটুকুই শুধু বলতে পারি, আমরা বিষয়টা তদন্ত করে দেখব। এটা খুব সিরিয়াস বিষয়। খুব গোপনেই তাই আমাদের কাজটা করতে হবে। কতটুকু সত্য, কতটুকু মিথ্যা- আগে সেসব জানতে হবে। প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তো কাউকে দোষীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানো ঠিক হবে না।'
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের প্রধান গাজী আশরাফ লিপু অবশ্য এমন কিছু হওয়ার আশঙ্কা আগে থেকেই করছিলেন। যে জন্য এসব ঠেকানোর পরিকল্পনাও করা হয়েছিল বলে তাঁর দাবি। কিন্তু তখন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সেসব পরিকল্পনা খুব একটা আমলে নেয়নি বলেই মনে করেন তিনি, 'এ রকম কিছু তো হতেই পারে। চলতি দুনিয়ায় যা ঘটছে, সেসব মাথায় রেখেই কিন্তু আমরা আকসু'র (আইসিসির অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট) ব্যবস্থা রেখেছি। সেই সঙ্গে প্রত্যেকটা দলকেই আরেকটা পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এখন আশা করি ওই পরামর্শ মেনে কাজ করার গুরুত্ব ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বুঝতে পারছে।' কী সেটা? 'প্রত্যেকটা দলকে বলা হয়েছিল সম্ভব হলে তারা যেন একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়। তিনি হতে পারেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা কিংবা হতে পারেন কোনো প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে থাকা কেউ। দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যাতে দুষ্টচক্রের হাত থেকে ক্রিকেটারদের বাইরে রাখতে পারেন, সে জন্যই এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে।' সেই সঙ্গে তিনি আরো যোগ করেছেন, 'এখন আমাদের আরো কিছু কাজ খুব গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। যেমন পর্যায়ক্রমে ক্রিকেটারদের এ বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা অবশ্য সচেতন। অন্যরা হয়তো ততটা না। এখন সেটা করার চেষ্টা করা হবে।' যাদের ক্রিকেটার প্রস্তাব পেয়েছেন, সেই ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসেরই কাল রাতের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সব ক্রিকেটারকে নিয়ে এমন একটা শিক্ষামূলক আলোচনায় বসার কথা।
by http://kalerkantho.com/

No comments: